বৈবাহিক

অভীক দত্ত

সোমবারের সকাল।
প্রবুদ্ধ খবরের কাগজ পড়ছিলেন। হিংসা, হানাহানি, মারামারি ছাড়া কিছু নেই। প্রবুদ্ধর মাথা গরম হয়ে যাচ্ছিল যত পড়ছিলেন।
অমলা কলেজের জন্য টিফিন বানাচ্ছিল। রান্নাঘর থেকে হাঁক পাড়ল— “বাবা, চা খাবে? নইলে স্নানে যাব।”
প্রবুদ্ধ বললেন, “না থাক। তুই তৈরি হয়ে নে। আমি ব্যাংকে যাব একবার তুই বেরোলে।”
অমলা টিফিন তৈরি করে টেবিলে রেখে স্নানে ঢুকল। আর প্রায় তার সঙ্গেই কলিং বেল বেজে উঠল।
প্রবুদ্ধ দরজা খুলে দেখলেন একটা বাইশ-তেইশ বছরের ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রবুদ্ধ অবাক হলেন। ছেলেটিকে চিনতে পারলেন না। বললেন “কী চাই?”
ছেলেটি বলল, “অমলা আছেন?”
প্রবুদ্ধ বলতে যাচ্ছিলেন, “তোর থেকে কত বড় আর তুই নাম ধরে ডাকছিস?” বললেন না।
বললেন, “এসে বোসো। স্নানে গেছে। আসছে।”
ছেলেটি ঘরের ভেতর এসে বসল। প্রবুদ্ধবাবু সোফায় বসে আড়চোখে ছেলেটিকে মাপলেন। বাইশ-তেইশই হবে। ফরসা, রোগা চেহারা। চোখে বেশ দীপ্তি আছে একটা। প্রবুদ্ধ বললেন, “তা তুমি টিউশন নিতে এসেছ অমলার কাছে?”
ছেলেটি বলল, “না, আমি অমলাকে বিয়ে করতে চাই। পুজোর সময় ওনাকে আমি প্রপোজ করেছিলাম। উনি বলেছিলেন আমি যদি ক্যাম্পাসিং-এ চাকরি পাই তাহলে আমাকে বিয়ে করবেন। কাল চাকরিটা হয়ে গেছে। সেই খবরই দিতে এসেছি।”
প্রবুদ্ধ শুকনো ডাঙায় আছাড় খেলেন।
ছেলেটির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললেন, “অমলা গেল জানুয়ারিতে চৌত্রিশে পড়ল।”
ছেলেটা মাথা নাড়িয়ে বলল, “জানি তো। ফেসবুকে উইশও করেছি।”
প্রবুদ্ধ কী বলবেন বুঝতে পারলেন না।
খবরের কাগজে মন দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
সাধারণত মেয়ের কোনও ব্যাপারেই তিনি থাকবেন না ঠিক করেছিলেন, কিন্তু এবার ব্যাপারটা ঠিক সহ্য হচ্ছিল না তাঁর।
অমলার স্নান করতে সময় লাগে। পনেরো থেকে কুড়ি মিনিটের কমে অমলা বাথরুম থেকে বেরোয় না। এই সময়টা প্রবুদ্ধর অসহ্য লাগছিল। তিনি চাইছিলেন ছেলেটার সঙ্গে অমলার কী কথোপকথন হয় সেটা যেন পুরোটাই শুনতে পান।
স্ত্রী তিলোত্তমা চলে যাবার পর আজকাল মেয়ের ব্যাপারে একটু বেশিই চিন্তা হয়। মেয়ে তাঁর কথা শোনে না। বিয়ে থা করেনি। মা বেঁচে থাকাকালীন মেয়েকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, অমলা শোনেনি। স্ত্রী বিয়োগের পর প্রবুদ্ধ একবার কথা তুলেছিলেন, অমলা তাঁকে সরাসরি বলে দিয়েছে এ ব্যাপারে কোনও কথা না বলতে। তারপরেই প্রবুদ্ধ জেদ করেছেন মেয়েকে বিয়ের ব্যাপারে জোর করবেন না। যা ঠিক করবে, তাই করুক।
ছেলেটি চুপচাপ বসে মোবাইল ঘেঁটে যাচ্ছে।
কাগজ পড়ার চেষ্টা করে মন বসাতে পারলেন না প্রবুদ্ধ। টিভি চালিয়ে নিউজ চ্যানেল দিলেন। সঞ্চালক লাফালাফি করছে। কুস্তি হচ্ছে না আলোচনা সভা হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না।
ছেলেটা বলল, “একটু জল পাওয়া যাবে?”
প্রবুদ্ধ বললেন, “ওই টেবিলে আছে। নিয়ে নাও।”
ছেলেটা উঠে জলের বোতল থেকে বাচ্চাদের মতো মুখ লাগিয়ে জল খেল।
প্রবুদ্ধর ঘেন্না হচ্ছিল, কিন্তু কিছু বললেন না। কাজের মেয়েটা এলে তাকে দিয়ে বোতলটা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
ছেলেটা আবার বসে মোবাইল ঘাঁটতে লাগল।
প্রবুদ্ধ বললেন, “তোমার নাম কী?”
ছেলেটা বলল, “স্যাম। পুরো নাম শ্যামলকান্তি চক্রবর্তী। কিন্তু বন্ধুরা ভালবেসে স্যাম বলে ডাকে।”
প্রবুদ্ধ বললেন, “ওহ।”
স্যাম বলল, “আপনি অমলার কে হন?”
প্রবুদ্ধ ‘বাবা’ বলেই কাগজে মন দিলেন।
ছেলেটা উঠে প্রবুদ্ধকে প্রণাম করতে এল।
প্রবুদ্ধ ছিটকে গিয়ে “না না থাক থাক” বলে পা তুলতে গেলেন, পারলেন না। স্যাম প্রণাম করেই ছাড়ল।
প্রবুদ্ধ বললেন, “এসবের কী দরকার?”
স্যাম বলল, “মা বলে দিয়েছে এখানে এসে আপনাকে প্রণাম করি যেন।”
প্রবুদ্ধ অবাক হয়ে বললেন, “তোমার মা জানেন?”
স্যাম আবার মোবাইলে মনোযোগ দিতে দিতে বলল, “হ্যাঁ, মা-বাবা সবাই জানে। আমি বলে দিয়েছি। বিয়ে তো একটা বড় ব্যাপার, তাই না? বাবা-মা, ফ্যামিলি ইনভলভ না হলে হয় নাকি?”
প্রবুদ্ধ বড় বড় চোখ করে স্যামের দিকে তাকিয়ে বললেন, “ও আচ্ছা।”
স্যাম বলল, “অমলার আর কতক্ষণ লাগবে?”
প্রবুদ্ধ বললেন, “জানি না। বলতে পারছি না।”
স্যাম আর কিছু বলল না। টিভিতে সঞ্চালক লাফঝাঁপ শুরু করেছে। প্রবুদ্ধর মাঝে মাঝেই ইচ্ছা করে লোকটাকে চিড়িয়াখানায় দিয়ে আসতে। এসব লোককে টিকিট কেটে দেখা উচিত।
টিভির টেবিলে অমলার ছোটবেলার বেশ কয়েকটা ফটো আছে। দেওয়ালে অমলার ক্লাস এইটে আঁকা ছবি। স্যাম উঠে সেগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল। প্রবুদ্ধ আবার কাগজে মন দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
শসা চাষের উপকারিতা সম্পর্কে দীর্ঘ একটা প্রবন্ধ লেখা হয়েছে। প্রবুদ্ধ কিছুক্ষণ সেটা পড়ার চেষ্টা করলেন।
তাঁর মাটিতে অ্যালার্জি আছে। এর আগেও বাড়িতে বাগান করার ইচ্ছায় মাটি কোপাতে গিয়ে হেঁচে কেশে একশা করেছেন। অমলা ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেছিল।
ডাক্তার সোম। অত্যন্ত মুখখারাপ একজন লোক। তাঁকে বলে বসলেন, “যেগুলো পোষায় না, বুড়ো বয়সে না করলেই নয়?”
প্রবুদ্ধ রেগে গেছিলেন।
কিন্তু কিছু বলেননি। শান্তিপ্রিয় মানুষ তিনি। বলার ইচ্ছা ছিল বাষট্টি বছরটা কোনও বয়স না। বিদেশে এই বয়সে লোকে জীবন শুরু করে। কিন্তু কিছু বলেননি। চিরকালই সব প্রতিবাদ মনে মনেই করেছেন। বলতে পারেন না।
স্যাম ব্যাগ থেকে একটা ডায়েরি বের করল।
প্রবুদ্ধর কৌতূহল হল, কিন্তু কিছু বললেন না। বাথরুমের দরজা খোলার শব্দ হল।
প্রবুদ্ধ বুঝলেন অমলা বেরোচ্ছে। তিনি গলা সামান্য তুলে বললেন, “তোর সঙ্গে কেউ দেখা করতে এসেছে।”
অমলা বললেন, “পাঁচ মিনিট বাবা, আসছি।”
প্রবুদ্ধ দেখলেন স্যাম ডায়েরিতে কিছু একটা লিখলে। তাঁর সঙ্গে চোখাচুখি হওয়ায় হেসে বলল, “ডায়েরি লেখার স্বভাব আছে আমার। যা হয়, লিখে রাখি।”
প্রবুদ্ধ অবাক হলেন। অমলারও ডায়েরি লেখার অভ্যাস আছে। ছোটবেলায় তিনিই শিখিয়েছিলেন ডায়েরি লিখতে। স্যাম অমলার পরের জেনারেশন। তার যে ডায়েরি লেখার অভ্যাস আছে… শুধু স্যামই না, এই প্রজন্মের কারও ডায়েরি লেখার শখ আছে সেটা অবাক করল তাঁকে।
তিনি বললেন, “তুমি অমলার ছাত্র ছিলে?”
স্যাম মাথা নাড়ল, “হ্যাঁ।”
“অমলা তোমাকে বিয়ে করবে বলেছে?”
স্যাম বলল, “হ্যাঁ। আমি নিজের পায়ে দাঁড়ালে তবেই।”
প্রবুদ্ধর হিসাব মিলছিল না। অমলার জন্য বেশ কয়েকজনকে দেখা হয়েছিল। তাঁর এন আর আই বন্ধু প্রভাসের ছেলে দিবাকরও তার মধ্যে একজন। এদের কারও সঙ্গেই অমলা বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে রাজি পর্যন্ত হয়নি। প্রথমেই বলে দিয়েছিল তার বিয়েতে কোনও রকম আগ্রহ নেই। এই ছেলেকে বিয়ের কথা বলেছে? অবশ্য এও হতে পারে ছেলেটা হয়তো ঘ্যানঘ্যান করেছিল, তার ফলশ্রুতি হিসেবে এ কথা বলেছিল অমলা।
কাগজটা ভাঁজ করে রাখলেন প্রবুদ্ধ। এখনই অমলা আসবে। প্রথমে থাকবেন ঠিক করেছিলেন। কিন্তু এখন চলে যাওয়াটাই ভালো হবে ভেবে উঠলেন।
মেয়ের কোনও ব্যাপারে থাকবেন না যখন ঠিক করেছেন, তখন না থাকাই ভালো।
সোফা ছেড়ে উঠতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় অমলা ঘরে ঢুকল। অমলাকে উঠতে দেখে স্যামও উঠে দাঁড়াল।
প্রবুদ্ধও দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন।
অমলা স্যামকে বলল, “বোসো।”
স্যাম বসে পড়ল।
অমলা প্রবুদ্ধর দিকে তাকিয়ে বলল, “কোথায় যাচ্ছ?”
প্রবুদ্ধ বললেন, “তোরা কথা বল, আমি ও ঘরে যাই।”
অমলা সোফায় বসে বলল, “না না তুমিও বোসো। তুমি গেলে হবে না।”
প্রবুদ্ধ কিছু না বুঝে সোফায় বসে বললেন, “না, মানে ছেলেটা বলছে তোকে বিয়ে করবে। তুই নাকি ওকে কথা দিয়েছিস চাকরি পেলে বিয়ে করবি?”
অমলা স্যামের দিকে তাকাল। বলল, “হ্যাঁ, দিয়েছিলাম।”
প্রবুদ্ধ বললেন “ও চাকরি পেয়েছে কাল। সেটা বলতেই এসেছে।”
অমলা স্যামের দিকে তাকাল। স্যাম বলল, “অফার লেটার পাঠাবে ওরা পরের সপ্তাহে। টেকনিক্যাল খুব টাফ ছিল। কিন্তু আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। এইচ আরে বেশি জিজ্ঞেস করেনি আর।”
অমলা বলল, “ঠিক আছে, এখন তো তুমি প্রবেশন পিরিয়ডে থাকবে। পারমানেন্ট হলে এগনো যাবে। ঠিক আছে? এখন যাও, আমি কলেজ বেরোব।”
প্রবুদ্ধ অবাক হয়ে অমলার দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানে কী? তুই সত্যি ওকে বিয়ে করবি?”
অমলা বলল, “হ্যাঁ। শ্যাম পুজোর সময় আমাকে সরাসরি এসে প্রপোজ করেছিল। আমি প্রথমে ওকে বুঝিয়েছিলাম যে এটা অসম্ভব ব্যাপার। আমাদের বয়সের পার্থক্য বারো বছর। শ্যাম আমাকে কনভিন্স করাতে পেরেছে যে এই এজ ডিফারেন্সটা কোনও ব্যাপার না।”
প্রবুদ্ধ বললেন, “কী কনভিন্স করেছে? মানে কীভাবে? আমিও জানতে চাই।”
অমলা বলল, “কনভিন্স করিয়েছে এজ ডিফারেন্সটা কোনও ব্যাপার না। আন্ডারস্ট্যান্ডিংটাই আসল। আমি কনভিন্সড। এছাড়াও বিয়ের পর ও আমাদের বাড়িতেই থাকবে। ওর মনে হয়েছে বাড়ি চেঞ্জ করাটা আমার পক্ষে কঠিন ব্যাপার। সেটাও আমার কনভিন্সিং মনে হয়েছে।”
প্রবুদ্ধ হতভম্ব হয়ে মেয়ের দিকে তাকালেন। কয়েক সেকেন্ড পর বললেন, “আমাকে কী করতে হবে?”
অমলা বলল, “তোমাকে কিছু করতে হবে না। শ্যামের প্রবেশন পিরিয়ড পেরিয়ে গেলে ওর বাবা-মা আসবেন। তোমরা বিয়ের কথা বলে নিও।”
প্রবুদ্ধ বুঝতে পারলেন না রাগবেন না কাঁদবেন না হাসবেন।
অমলা চিরকালই পড়াশুনায় ভীষণ ভালো। কোনোদিনও পড়তে বলতে হত না।
মেয়ের পড়াশুনার ব্যাপারে কোনোদিনই প্রবুদ্ধ এবং তিলোত্তমাকে চিন্তা করতে হয়নি। চিন্তাটা শুরু হল বরং পড়াশুনা শেষের পর। তিলোত্তমার বাড়ি থেকে কিংবা প্রবুদ্ধর আত্মীয়স্বজনরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান এলে একই প্রশ্ন করে যায়— “কী গো! মেয়ের বিয়ে কবে?” “মেয়ের বিয়ে দেবে না?” “এত বড় মেয়ে আইবুড়ো হয়ে থাকলে কি ভালো?”
তিলোত্তমা মেয়ের চিন্তাতেই সুগার বাধিয়ে বসলেন এবং একদিন মরে গেলেন।
প্রবুদ্ধ একদিন মেয়ের ঝাড় খাবার পর নিজের সঙ্গে বসলেন। নিজেই ঠিক করলেন মেয়ের কোনও ব্যাপারে তিনি নেই। তারপর থেকে সুখেই ছিলেন। এতদিন পর হঠাৎ এতটা অগ্রগতি হবে সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি।
স্যাম একটা ঝোলা ব্যাগ এনেছিল। সেটা হঠাৎ হাতড়াতে শুরু করল। অমলা বলল, “কী খুঁজছ?”
স্যাম খুঁজে পেল। হাসিমুখে একটা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী সমগ্র বের করে প্রবুদ্ধর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, “এটা পড়তে পারেন।”
প্রবুদ্ধ একবার অমলার দিকে, আরেকবার স্যামের দিকে তাকিয়ে বললেন, “কী আছে এতে?”
স্যাম বলল, “ছোটদের পুরাণের গল্প। সরল ভাষায় লেখা। বলরাম আর রেবতীর কাহিনি। একশ চৌষট্টি পাতা। রেবতী ত্রেতা যুগের মহিলা ছিলেন। তাঁর বাবার নাম রৈবত ককূম্মী। রূপে, গুণে রেবতী অতুলনীয়া ছিলেন। ত্রেতা যুগে তাঁর সমকক্ষ কোনও পুরুষ পাওয়া না যাওয়ায় তাঁর বাবা তাঁকে নিয়ে ব্রহ্মার দরবারে যান। ব্রহ্মার দরবারে হাহা এবং হুহু নামক দুই গন্ধর্ব সেখানে ব্রহ্মাকে গান শোনাচ্ছিলেন। তখন তো আর কথা বলা সম্ভব নয়। যাই হোক, সে সঙ্গীত যখন শেষ হল, তখন দু-যুগ পেরিয়ে গেছে। রৈবত ব্রহ্মাকে বললেন, আমার রেবতীর জন্য পাত্র খুঁজে দিন। ব্রহ্মা রেবতীর বাবাকে বললেন, তোমরা ত্রেতা যুগে এসেছিলে। কিন্তু এখন তো আর ত্রেতাযুগ নেই। ব্রহ্মার দরবারে জরা-মৃত্যু কিছু নেই। এদিকে গান শুনতে শুনতে দু-যুগ পেরিয়ে গেছে। এক কাজ করো, তুমি বলরামের সঙ্গে রেবতীর বিয়ে দাও। তাঁরা মর্ত্যে এসে কৃষ্ণ এবং বলরামকে তাঁদের আর্জি জানালেন। এদিকে রেবতী তো বলরামের থেকে অনেক লম্বা। ত্রেতাযুগের মানুষেরা সবথেকে বেশি লম্বা ছিল। তারপরে সত্যযুগের মানুষেরা। দ্বাপর সে তুলনায় কিছুই লম্বা নয়। যাই হোক, বলরাম তাঁর লাঙ্গল দিয়ে রেবতীকে তাঁর সমান করে দিলেন। এরপরে দুজনে সুখে ঘরকন্না করতে লাগলেন।”
প্রবুদ্ধ অবাক চোখে বললেন, “এটা জেনে আমি কী করব?”
স্যাম বলল, “প্রচুর লোক থাকবে যারা আমাদের বিয়ে নিয়ে হাসাহাসি করবে, ট্রল করবে। আপনি এই বইয়ের গল্পটা বিয়ের কার্ডে জেরক্স করে সবার কাছে পাঠাবেন। সঙ্গে লিখে দেবেন, আমার রেবতীর জন্য ওর জেনারেশনের কাউকে পাইনি। তাই শ্যামলকান্তির সঙ্গেই বিয়ে ঠিক করা হল।”
অমলা হাসছিল বাবার দিকে তাকিয়ে। বলল, “ঠিক আছে না পাত্র?”
প্রবুদ্ধ অমলার কথার উত্তর না দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে স্যামকে বললেন, “বইটা রেখে যেও। জেরক্স করিয়ে তোমাকে ফেরত দেব পরে।”

2 comments on “

বৈবাহিক

অভীক দত্ত

  1. অদ্ভূত সুন্দর। এত ভালো প্লট জাস্ট ভাবা যায় না।

Leave a Reply to কিশোর ঘোষাল

Your email address will not be published. Required fields are marked *