বাঙালির সঙ্গে মে মাসের সম্পর্ক বড় নিবিড়। পয়লা মে থেকে শুরু করে সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন, আমাদের জাতীয় উৎসব পঁচিশে বৈশাখ, কার্ল মার্ক্সের জন্মদিন হয়ে সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে আমরা এ বছরই বোধ হয় প্রথম খেয়াল করলাম মান্টো, ফাইনম্যান আর দালির জন্মদিন একই দিনে। এ বঙ্গের জনজাতির সঙ্গে এই নামগুলোর যোগ বড় নিবিড়। মে মাস তাই বাঙালিয়ানার উৎসব।
চলছে দেশজুড়ে আরও এক উৎসব। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতবর্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নিচ্ছে তার পরবর্তী শাসক। পীড়াদায়ক রাজনৈতিক প্রচারের মধ্যে এ গ্রীষ্মে বাংলায় কালবৈশাখীর আভাস কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার জন্যে যথেষ্ট। বাঙালি গ্রীষ্মের গৈরিক রূপেই অভ্যস্ত, তার বাইরেও জোর করে চাপিয়ে দেওয়া গেরুয়া রঙে মে মাসের উদ্যাপনে কোথায় যেন সুর কেটে যাচ্ছে। জানালার বাইরে এসে কারা যেন বলে যাচ্ছে– ‘জয় শ্রী রাম’ আমাদের স্লোগান। স্লোগানের কমতি কোনোকালেই ছিল না আমাদের। তার পরও ধার করা বুলিতে কেন কাজ চালাতে হবে, সে নিয়ে ধন্দ থেকেই যাচ্ছে। যে কোনও ফ্যাসিস্ত শক্তি আক্রমণ করে প্রথমত সংস্কৃতি থেকে, বাঙালি কবিদের মূর্তির ওপর হামলা তারই অন্যতম প্রথম ধাপ।
এমন বিপদে বাঙালি তার সদর দরজা কীভাবে সামলাবে– তার ওপর নির্ভর করছে পরের কয়েক বছরে বাঙালিয়ানার বাঁকবদলের গল্প।